টেকনাফে ছাত্রলীগ নেতা মোস্তফাসহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা!

নিজস্ব প্রতিনিধি •


টেকনাফের হ্নীলায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় ২৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উক্ত মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফাসহ ২৮ জন আসামি করা হয়েছে।

১০ এপ্রিল(রবিবার) হ্নীলার মৌলভীবাজার নাইক্ষংথালী এলাকার অলি আহমদের ছেলে বেলাল উদ্দীন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান মামলা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়েছে, গত ৮ এপ্রিল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় লাঠি, দা ও ছুরি নিয়ে বাদীর ভাতিজা সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা চালায় আসামিরা। ভাতিজাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে বেলাল উদ্দীনকেও মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। একই সময়ে আসামিরা ইট-পাটকেল ছুড়ে স্থানীয় মসজিদের জানালাসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীর ওপর হামলা করা হয়।

ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, এজাহারটি প্রাথমিক তদন্ত করে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

মামলার বিষয়ে জানতে টেকনাফ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল মোস্তফাকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। অবশ্য সংঘর্ষের পর তিনি বলেছিলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশসহ আমরা সবাই মিলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছি। উভয় পক্ষের লোকজন আমার পরিচিত ছিলেন। এ সময় কয়েকজন আহত হন।

জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সায়েদ আমিন নিশান দু:খ প্রকাশ করে বলেন, নুরুল মোস্তফা তা চলমান জীবনের অতিতের কোন সময়ে ছাত্রলীগ করেনি, সে ছিল ছাত্রদল নেতা হঠাৎ করে ছাত্রদল থেকে এসে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেল। আর সেই মুল্যবান পদবিটি ব্যবহার করে বিভিন্ন বিতর্কিত কাজ করে ছাত্রলীগের মানসম্মান ক্ষুণ্ন করছে নুরুল মোস্তফা। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

প্রসঙ্গত, কানে হেডফোন দিয়ে রাস্তা পার হওয়া এক যাত্রীর গায়ে টমটমের ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া শুরু হয়। এতে প্রভাব খাটাতে চেয়েছিলেন নুরুল মোস্তফার আত্মীয় সুলতান আজম।

এ নিয়ে মৌলভীপাড়া ও পাহাড়পাড়া গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে শুক্রবার বিকালে সুলতানের সঙ্গে সাইফুল ইসলামের লোকজনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির একপর্যায়ে সাইফুলকে মারধর করেন সুলতান। এ সময় সাইফুলকে বাঁচাতে তার চাচা বেলালসহ অন্যরা এগিয়ে আসেন। সুলতানকে তারা ধাওয়া দেন।

পরে বিপুল সংখ্যক লোকজন নিয়ে আবারও সাইফুল ও তার চাচা বেলালকে মারধর করেন সুলতান। খবর পেয়ে সাইফুলের পাড়ার লোকজনও এগিয়ে আসেন। পরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রামবাসী। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন